আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন
রবিবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮   |   sonalisandwip.com
কোয়াসমেন্ট করা হউক উড়িরচরের বাসিন্দাদের

কোয়াাসমেন্ট একটি জুডিশিয়াল শব্দ। হয়তো অনেক সুশিক্ষিত মানুষের ও ধারণা নেই এই রোমান শব্দটার প্রতি। হাই কোটে কোন একপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে যদি করা কোন মায়লায় সংক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিকার চেয়ে মামলা গুলো শুনানি করে,, হাইকোর্ট যদি আবেদন কারীর আর্জিতে সন্তুষ্ট হয় ও কোর্ট নিশ্চিত হয় যে ভিক্টিম নি অপরাধ তাহলে তাকে এ জালিয়াতি মামলা থেকে খালাস দিয়ে রায় দেওয়া হয়। উহাকে বলা হয় কোয়াসমেন্ট। আইনের এ ব্যাখাটি আরও সুন্দর করে দেওয়া যেতো কিন্তু উদ্যেশ্য আইন শেখানো নয়।

উড়িরচরের এক দীর্ঘ ইতিহাস, হাসি কান্না দুঃখ বেদনা ভরা জলবেষ্টিত এক জনপদ। ৬০মৌজার দুঃখীনি সন্দ্বীপ যখন বিচ্ছেদে বিরহে একাকার, চতুর্দিকের সর্বগ্রাসী মেঘনার উম্মাদনা, বিচ্ছিন্ন আপন সন্তান যখন নিরবে প্রস্থান, সর্বশান্ত সন্দ্বীপের অঙ্গহানি তখনই ধুমকেতুর ন্যায় ভেসে উঠল দুর নদীতে সন্দ্বীপের ই অঙ্গীভূত অসার দেহ এক দ্বীপ । ১৯৭০সালের এক হ্নদয়বান মহামানব জন্মভূমির মায়ায় নিজের জান যৌবনের দিনগুলি বিলিয়ে দিয়ে আপন স্বজাতিকে নিয়ে গড়ে তোলেন তিলোত্তমা জনপদ,,নাম স্নেহের উড়িরচর। এই উড়িরচরের গর্বিত জনক ও সন্দ্বীপের মহানায়ক #আছাদুল_হক_চৌধুরী_সাহেব_মিয়া।

১৯৮৫ সালের গ্রেজেট প্রকাশের মাধ্যমে উড়িরচরের পথ যাত্রা শুরু হলে এসে যায় শকুনির রক্ত চক্ষুর চাহনি। প্রাকৃতিক দুযোগ ও পাশ্ববর্তী জেলার শিয়াল পন্ডিতের চালাকি ও সন্দ্বীপের নেতৃত্বের অসহযোগিতা,পিছিয়ে আছে আমাদের তিলোত্তমা দ্বীপ উড়িরচর ইউনিয়ন। খাদ্য বস্র বাসস্থান চিকিৎসা শিক্ষা বঞ্চিত এ দ্বীপের মানুষ গুলো যেন গুনায়ন্তমালায় বস বাস করছে। যা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা বর দায়।

১৮৬০ সালের নদীসিকিস্তি আইন ও ৬০মৌজার সন্দ্বীপের সীমান্ত হিসেবে যেখানে চরকচ্ছপিয়া,চর এলাহী, খাসের হাট হয়ে সোনাপুরের তৎকালীন ফেরীঘাটের পিলার পর্যন্ত সন্দ্বীপ, সেখানে কিভাবে উড়িরচরের উত্তরের পশ্চিম অংশ নোয়াখালী জেলার হয়?জনমনে শুধু প্রশ্ন আর প্রশ্ন। আমাদের দিন মজুর ভাইদের ক্ষেতের ফসল কেড়ে নেওয়ার সাথে দড়ি দিয়ে বেধে নিয়ে যাচ্ছে আমার ভাই বন্ধুকে।অবশেষে আশ্রয় হয় কোম্পানি গঞ্জ থানায়। ১৯৮৫ সালের ব্যারিষ্টার মওদুদ ও ২০১৮ সালের ওবায়দুল কাদেরের কুৎসিত থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা এ তিলোত্তমা জন দ্বীপ।

উড়িরচরের আভ্যন্তরিন অনেক সমস্যা বিদ্যমান।দ্বীপ ইউনিয়ন হিসেবে জীবন যাত্রার মান খুবই খারাপ। শিক্ষা চিকিৎসা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দেশের রাজনৈতিক সরকার পরিবর্তনের সাথে সমগ্র দেশের কিছু পরিবর্তন হলেও উড়িরচরের কোন পরিবর্তন হয়না। ১৯৮৫ সালের দুনিয়া কাঁপানো বন্য আজও ভুলতে পারেনি উড়িরচরের বাসিন্দারা। ৯৬ সালে একবার উড়িরচর ভ্রমণ কালে পাকিস্তান মসজিদের কাছে এক বাড়ীতে রাতে কান্নার আওয়াজ শুনে দেখতে পেলাম এক বৃদ্ধা সকল স্বজন হারিয়ে এখনো ভুলতে পারেনি,তাই তাদের বিরহে অশ্রু বরনে দিনাতিপাত করছে।

উড়িরচরের মানুষ গুলো সন্দ্বীপের সন্তান ও আমাদের আপনজন। তাদের যত মৌলিক অধিকার আছে তার সবটুকু ফিরিয়ে দিন। জাতীয় নির্বাচনের পরে সকল ফ্লোর থেকে আওয়াজ তুলুন। আমাদের উড়িরচরের নদী ভাঙ্গন রোধে ফেনী নদীর বাঁধ কেটে দিন।কোয়াসমেন্ট করা হউক উড়িরচরের বিরুদ্ধে যত কালাকানুন। রেহাই দেওয়া হউক ওবায়দুল /মওদুদের রোষানল থেকে তিলোত্তমা বাসীকে। ধন্যবাদ সকলকে।

 

এস এম জাকিরুল আলম মেহেদী।

পরিচালক.. হালিশহর মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম।