আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯   |   sonalisandwip.com
.

রকেটে না তুলেই চাঁদে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা দেয়ার ‘উপায়’ বের করেছেন বাংলাদেশের একদল তরুণ। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এ যাবত্কালের বিভিন্ন গবেষণার তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে ‘লুনার ভিআর’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছে বাংলাদেশের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তরুণরা, যা ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে’ বাংলাদেশের জন্য প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব ছিনিয়ে এনেছে।

কী জানা যাবে: এ অ্যাপটির মাধ্যমে মূলত নাসার অ্যাপোলো-১১ অভিযান, মহাকাশ যানটির অবতরণ এলাকা, চাঁদ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা এবং চাঁদকে একটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আবর্তন করা যাবে। নাসায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্বকারী এ দলটির নাম সাস্ট অলিক। ছাত্র-শিক্ষকের সমন্বয়ে মোট পাঁচজন সদস্য রয়েছেন এখানে। তারা হলেন— ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী মাইনুল ইসলাম, আবু সাদিক মাহদি এবং সাব্বির হাসান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এসএম রাফি আদনান। আর এ দলটিকে মেন্টর হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, মানুষ জানতে পারবে চাঁদের পৃষ্ঠটা দেখতে কেমন, সেখানে কী কী আছে, সেখানকার তাপমাত্রা কেমন, মহাকাশ যান অ্যাপোলো-১১ কোথায় অবতরণ করেছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাত্ নাসার যে গবেষণাগুলো সাধারণ মানুষের আজও অদেখা অজানা, সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে দলটি। কেউ চাঁদে না গিয়েও চাঁদ দেখতে কেমন সেটা ৩৬০ ডিগ্রি ভিউতে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। ঘুরতে পারবেন। হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন। এ ছাড়া চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে মহাকাশ দেখতে কেমন লাগবে, সূর্যগ্রহণের অভিজ্ঞতা কেমন হবে সেটার একটি কল্পিত রূপ তুলে ধরা হয়েছে এ অ্যাপ্লিকেশনে।

এ বছর নাসা, বিশ্বের প্রায় দুই শতাধিক শহরে ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা শহর থেকে এ প্রতিযোগিতার জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা জমা দিতে বললে, প্রাথমিকভাবে দুই হাজারের বেশি প্রজেক্ট জমা পড়ে। সেখান থেকে প্রতি জেলা থেকে একটি করে মোট আটটি প্রকল্প বেছে নেয়া হয়। চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের প্রজেক্ট নাসার কাছে জমা দেয়। পরে আন্তর্জাতিক আসরে ৭৯টি দেশের বাছাইকৃত ২ হাজার ৭২৯টি দলের সঙ্গে লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের সাস্ট অলিক। ছয়টা ক্যাটাগরির মধ্যে ‘বেস্ট ইউটিলাইজেশন অব ডেটা’ অর্থাত্ নাসার কাছে যে তথ্য আছে তার সবচে ভালো প্রয়োগের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অ্যাপ ‘লুনার ভিআর’ প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন। পেছনে ফেলে দেয় ক্যালিফোর্নিয়া, কুয়ালালামপুর ও জাপান থেকে আসা দলগুলোকে। বৈশ্বিক পর্যায়ের এমন আসরে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া এটাই প্রথম।