মাওলানা নাজিম উদ্দিন
পবিত্র কোরআনের সুরায়ে মায়েদার ৩ নং আয়াতের শেষের দিকের অংশে আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আজকে আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদেরকে আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসাবে পছন্দ করে নিলাম। ” এই আয়াতটি রাসুল (সাঃ) বিদায় হজ্বের ভাষণের দিনে আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করেছিলেন। সুতরাং ঐতিহাসিক বিদায় হজ্বের ভাষণের ঘটনাই হলো এই আয়াতের শানে নুযুল। তাহলে বিদায় হজ্বের ভাষণ কোনটা আর বিদায় হজ্ব কোনটা প্রত্যেক মুসলমানের মুসলমান হিসেবে জানা থাকার কথা।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এই দুনিয়াতে শুভাগমন করেছিলেন ৬৩ বছরের জীবন নিয়ে। ৬৩ বছর আগে এক রবিউল আওয়াল মাসে তিনি শুভাগমন করেছেন, আবার ৬৩ বছর পরে আর এক রবিউল আওয়াল মাসে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। বিদায় নেওয়ার তিন মাস আগে জীবনের শেষ হজ্ব পালন করেছিলেন। শেষ হজ্বের তিন মাসের মধ্যে দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে গেলেন। এ জন্য রাসূল (সাঃ) এই হজ্বটাকে বিদায় হজ্ব বলে। হজ্বের ফরজ সমূহের মধ্যে একটা বড় ফরজ হলো জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা , আরাফাতের এক প্রান্তে একটা পাহাড় আছে, যার নাম জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। এর যত কাছে থাকা যায় ততবেশি রহমত বরকত পাওয়া যায়। সেই পাহাড়ের পাদদেশে নিজের বাহনে আরোহিত অবস্থায় মুহাম্মদ স: আছরের নামাজের মসয় সমবেত লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরামের সামনে যে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন সেটাকেই বিদায় হজ্বের ভাষণ বলা হয়। ভাষণের একাংশে আল্লাহর রাসূল বলেছিলেন, “আল্লাহ নারীদেরকে আইনের মাধ্যমে তোমদের অধিকারে দিয়েছেন” সুতরাং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে এবং সদয় হতে হবে।
কিন্তু যারা না বুঝে এ অধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এ প্রশ্নের জবাবে বলতে হবে, সাধারণত পুত্র থাকে পিতার অধীনে, এই অধীনতার অর্থ কি নিষ্ঠুরতার সুযোগ, না দয়া-মায়ার সুযোগ? ছাত্র শিক্ষকের অধীনে থাকা, এই অধীনতার অর্থ নিষ্ঠুরতার সুযোগ, না স্নেহ মমতার সুযোগ? নিশ্চয় দয়াময়ার সুযোগ। তেমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে পুরুষদের অধীনে করে দিয়েছেন কেন? সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলে দিয়েছেন তাদের সাথে সদয় ব্যবহার করবে। এরকম বহুমূল্যবান কথা বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেছিলেন। ভাষণের শেষের দিকে সমবেত সাহাবায়ে কেরামদেরকে সাক্ষী করে বলেছিলেন, আমি কি আল্লাহর অবতীর্ণ করা বিষয়গুলি তোমাদের পৌঁছে দিয়েছি? (চলমান--)