মা মাটি ও মানবতার সন্তান, আধ্যাত্বিক রাহবার,মানবিক গুণ সম্পন্ন ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবু ছাপা তালুকদার। পর্দার অন্তরালে থাকার অভ্যস্ত এ মহান মানুষকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। হাজারো স্মৃতিগাঁথা অতীত বারবার গুমরে উঠে, বুক ভেসে যায় নয়ন জলে। প্রখ্যাত হতে আসেনি কভু তাই স্মৃতির অন্তরালে চড়ে বেড়ায় জানা মহান মানুষটির চমৎকার স্মৃতি গুলো।
ভার্চুয়াল জগতের বাইরে তিনি, চাইলে তিনি আর আমাদের কোন উপকার করতে পারবেনা, কিন্তু ওনার গুণ সমৃদ্ধ স্মৃতিকথা গুলো সাদাকায়ে জারিয়া হিসেবে ওনার আমল নামায় যোগ হবে, এটি আমার বিশ্বাস।
জীবন সংগ্রামী এক মহানায়ক, জন্মগ্রহণ করেন পুর্ব হরিশপুর আবদুল হামিদ তালুকদারের বাড়ীতে।
পাঠশালার বিদ্যা শেষে জড়িয়ে গেলেন জীবন যুদ্ধে।
পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় জীবনের স্বাদ আহ্লাদ বলতে সংগ্রাম কে বেচে নিয়ে ছিলেন। যোগদান করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী তে।পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর শোষণ বঞ্চনা নিপীড়ন ওনাকে আহত করে। প্রতিশোধের নেশা ও স্বাধীন জাতি সত্তার চিন্তায় জিবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে।
দেশ স্বাধীন করে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।
সেনাবাহিনী থেকে সেচ্ছায় অবসরে গিয়ে উড়াল দিলেন মধ্যেপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধনী দেশ কুয়েতে।পরিবার পরিজনের একটু সুখের স্বাদ দিতে নিজেকে বিলিয়ে দেন মরুদ্যানে।আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সহ অনেক সন্দ্বীপীয়ান কে কুয়েতে এনে ওদের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে দেন।
জীবন সংগ্রামী এ যুদ্ধা ১৯৮৮ সালে স্বদেশের মাটির গন্ধ নিতে ফিরে আসেন দেশে। শুরু করেন পাইকারী নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ব্যাবসা।চোর, পরের হক লুটপাট কারী ও প্রতারণার ফাঁদে নিজের পুঁজি হারিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হন।মনোযোগ দেন আধ্যাত্তিকতায়।
জীবন জীবনের প্রতিটি বাঁকে আল্লাহর সন্তষ্টির চেষ্টায় সফল হন। দিন দিনান্তে নিশান্তে কেটেছে জিকির আজকার ও জায়নামাজে।দানের হাত ছিল প্রসারিত।
রাস্তার অনেক পাগল পাগলীকে নতুন নতুন কাপড় কিনে পড়িয়ে দিতেন, যা আমি বহুবার দেখেছি।
বাড়ির সামনে মসজিদ নির্মান করে নিজ হাতে মসজিদের ক্ষেদমত করতেন একাগ্র চিত্তে।নিজের নির্মিত মসজিদে সিজদারত অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আল্লাহর কাছে অশ্রু সিক্ত দুনয়নে শুধু ফরিয়াদ,, হে রাব্বুল আলামীন দয়াবশতঃ মরহুম আবুছাপা তালুকদার সাহেব কে রহম করুণ, ক্ষমা করুন, আর আপনার নেক বান্দাদের সাথে জান্নাতে ফেরদাউসে স্থান দিন।
# এস এম জাকিরুল আলম মেহেদী
লেখক ও সাংবাদিক