আজ বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ || ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২   |   sonalisandwip.com

বিবেকজল 

মাটিজলে মাখা জীবনের ক্লান্তিহীন যাত্রা।

একটি ছোট জলাধার থেকে জীবনের পথপরিক্রমা,

সাগর সঙ্গমে প্রয়াণ।

জীবনের পাতায় পাতায় জীবন সঙ্গম।

কখনো মুখরতা, কখনো নীরবতা,

প্রতিটি অতীত কণা মিশে যায় আগামীর জলতরঙ্গে।

জীবনের আগুন জ্বালাতে কি পেরেছি?

রাস্তায় পাশদিয়ে হেটে যাওয়া অন্ধ ভিখারিনী বলে,

“সবাই আলো নিয়ে চলে যায়, আমি আঁধারের পথিক”।

বিধাতার উপহার দুটো চোখে আলোর আদ্যোপান্ত নির্যাস নিয়ে

আমি আলোর ব্যারিকেড দিয়ে অস্তাচলগামী সুর্যের পথ রোধ করি।

সুর্য মৃদু হেসে বলে,

“ঘনকৃষ্ণ আধাঁরের নিমন্ত্রণে যাচ্ছি, যেখানে রাত্রির ভেতরে

রাত্রি মিশে যায়- অমানিশার মোহনায়”।

কে শোনে কার কথা?

তবুও মেঘমন্ত্রিত কন্ঠে আমি বলি,

যেই মহাপ্রভুর নির্দেশে শিশু ঈসমাইল (আ:) এর শুভ্র পায়ের

খোঁচায় সৃষ্ট পবিত্র জমজমের ঝরণা ধারা আজো প্রবাহমান,

সেই মহামহিম প্রভুর ঈঙ্গিতেই কোন এক মুহূর্ত বিন্দুতে

আমাদের বিবেকের খোঁচায় বুকের স্বচ্ছ্ব ভালোবাসার নির্ঝর

কলকল করে বিবেক জলের জলসত্র বিছিয়ে দিক।

এ জলে আলো জ্বলে, এ জল সত্যের পুষ্পিত

সুরভী ছড়ায়, এ জল মায়াবী প্রশান্তির জলধি নির্মাণ করে।

এসো আলো জলের জলতরঙ্গে অবগাহণ করি।

এসো উচ্চকিত কন্ঠে বলি,

“হাল জাঝাউল ইহছা-নি ইল্লাল ইহছা-ন।

উত্তম কাজের প্রতিদান উত্তম ছাড়া আর কী হতে পারে?”

কাজী জিয়া উদ্দিন

ডিআইজি।

 

বিজয় বিভাস 

হাসতে পারে না, গাইতে পারে না

এমন গোলামীপনা

দুইশ বছর দুষ্ট বেনিয়া

হয়নি তো বনিবনা।

আরেক বেনিয়া কন্ঠ চেপে

কেড়ে নেই মোর ভাষা

আমার মাটির নির্যাস নিয়ে

খেলেছে সর্বনাশা।

ভাই ডেকে পেতেছে ফাঁদ

বানিয়েছে মোরে দাস

নতুন লঙ্কায় নতুন রাবণ

কেড়েছে মুখের গ্রাস

গোলামীর বেড়ী গোলামীর ঘর

বাঙালীর জীবন জলের দর।

কব্জী চিপে রক্ত চুষে

ফেলেছে গভীর খাদ

ত্রিশুলে আজ বিদ্ধ হলো

স্বপ্নমাখা চাঁদ।

রক্ত নিয়ে খেলেছে হোলি

জান্তা শকুনে ভরা

আমার মায়ের হাসিটুকু

কান্না দিয়ে মোড়া।

অসূর দানব হাসতে হাসতে

ফেলেছে মোদের লাশ

আমার দেশের মানুষগুলো

তাদের কৃতদাস।

জান্তারাতো ভেবেই বসে

আমরা অতি সরল

বাংলা মায়ের দামাল ছেলে

ঢালতে পারে গরল।

বালিয়াড়ি ভেঙ্গে দিলো

দামাল ছেলের স্রোত

ভস্ম হয়ে বুঝলো শকুন

সরল প্রাণের ক্রোধ।

ঊর্দিপরা জান্তারা সব

যুগের নতুন আর্য

মাটির মানুষ ভেঙ্গে দিলো

উদ্ধত কৌমার্য।

মাটির মানুষ মাটির আয়ুধ

হাতে মাটির ঢেলা

মাটির মায়ায় প্রাণ দিয়েছে

এনেছে বিজয় মেলা।

মাটির মাঝে কান পেতে শুনি

মুজিব কন্ঠের জাদুময় গর্জন

ভোরের হাওয়ায় পাখা মেলে

এসেছে বিজয় সাতরাজার ধন।

বঙ্গবন্ধুর কন্ঠে ছিলো

ইমন কল্যাণ রাগ

কন্ঠের যাদু সুরের লহরি

বাঙালীর মনোবেহাগ।

জ্যোতির্ময় এই মহামানবের

বিমূর্ত ভালোবাসা

রক্তঋণ যে শুধতে হবে

বিজয়ীর প্রত্যাশা।

ঝলমলে এক জলের আরশিতে

বঙ্গবন্ধুর হিরণ্ময় মুখ

ঐ মুখপানে বিম্বিত আজ

বাঙালী জাতির সুখ।

বঙ্গবন্ধু সত্য, ন্যায়ের

অনন্য প্রতিভাস

সাম্য, মুক্তি, শান্তির

চিরভাস্বর ইতিহাস।

বঙ্গবন্ধুর মাথার চেয়ে

উচুঁ নয়তো আকাশ

শেকড় থেকে শেখরের পানে

বাঙালী জাতির বিকাশ।

প্রতীতি

আমার বাড়ী, আমার গাড়ী, আমার জারিজুরী

আয়েসী এক জীবনাচার কুমড়োপটাস ভূড়ি

হাস্যমুখে দাস্যসুখে বিবেক বিক্রি হলো

নৃত্যতালে বল্গা চালে পাগলা ঘোড়া চলো ।

অর্থবিত্ত রঙীন প্রাসাদ হলো ভুরি ভুরি

শুদ্ধতম আত্নাটিযে হয়ে গেলো চুরি

মানুষ হওয়ার স্বপ্ন ছিল, বুকে আলোর রবি

রঙীন চশমা পরে এখন প্রেতের প্রতিচ্ছবি ।

মাটির সাথে বলেছি কথা, শুনেছি হাওয়ার গান

উপচে পড়া বৈভব আজ, নেই তো মাটির টান

মরা গাঙে আরকি কভু আসবে ফেনিল জল

আমার চোখে এখন কেবল অশ্রুমাখা ঢল।

বিবেক তোমায় দিয়েছিলাম বিদায় সম্ভাষন

এখন আবার দেব তোমায় হৃদয় সিংহাসন

বিবেক তোমার চরণ ছুঁয়ে করছি নতুন পণ

আবার আমি মানুষ হবো,খোলো আলোর গগণ।

লাবণ্যময় নতুন জীবন, প্রদীপ্ত এক লগন

হৃদ্ধ জমিন, শুদ্ধ যাত্রা, আসমানি সমন

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্- আলোর মহা উদ্ভাসন

সূর্যোদয়ের শপথ আজ-কণায় কণায় উজ্জীবন।