আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
শনিবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৩   |   sonalisandwip.com
সন্দ্বীপের রাস্তায় বাড়ছে যানজট। ট্রাক চালনায় সময় বেঁধে দেওয়া ও ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজন

বাদল রায় স্বাধীন :: সন্দ্বীপের রাস্তায় দিন দিন বাড়ছে প্রচুর যানজটের ঘটনা। তালতলী, উপজেলা কমপ্লেক্স,সেনেরহাট ও এনাম নাহার এখন যানজটের কমন চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন যানজট শুরু হলে বিশ থেকে ত্রিশ/চল্লিশ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিনিয়ত সন্দ্বীপের রাস্তায় প্রচুর ট্রাক,ট্রলি, সিএনজি, রিক্সা সহ নতুন আবির্ভাব ঘটা ঝুঁকিপুর্ন বাহন অটোরিক্সার জ্যাম লেগে যাতায়তে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগনকে। বিশেষ করে অফিস সময় সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময়ে প্রায় রাস্তায় জ্যাম লেগে যায়।

উপজেলার ভাই ভাই হোটেল মোড় বা আবাসিক গলির সামনে, ইসলামিয়া ব্যাংক সন্দ্বীপ উপজেলা শাখার সামনে, সেনের হাট তিন রাস্তা মোড় ও এনাম নাহার এলাকা গুলো হলো যানজটের হট স্পট। করোনাকালীন সময়ে দেখা গেছে এ সমস্ত জ্যাম ছাড়াতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থাকা নৌ-বাহিনীর সদস্যরা টহলরত অবস্থায় রাস্তায় নেমে নিজেরা ট্রাফিকের মতো দায়িত্ব পালন করেছিলো। বর্তমান সময়ে মাঝে মাঝে কিছু সচেতন যুবককেও হঠাৎ করে জট ছড়াতে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বের ভুমিকায় কাজ করতে দেখা গেছে।

সন্দ্বীপের রাস্তায় এমন জ্যামের কারন খুঁজতে গেলে যাত্রীরা বলছেন অফিস সময়ে এই সরু রাস্তায় প্রতিদিন শতশত ট্রাক ট্রলি কন্সট্রাকশনের পণ্য পরিবহন করে এবং বেশীর ভাগ ইট, বালী সিমেন্ট ব্যবসায়ী তালতলী থেকে এনাম নাহার মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত। আর তাদের নির্মান সামগ্রী পরিবহন করতে গিয়ে এই যানজট লেগে যায়।বর্তমানে অদক্ষ অটোরিক্সা চালককেও যানজটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

এছাড়াও প্রচুর ট্রলি,অটোরিক্সা, সিএনজি ও বিয়ের যাত্রীবাহী বাস এর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে। এর প্রতিকারে কি করা যায় এমন প্রশ্নে মনির নামে এক যুবক বলেন সন্দ্বীপে ট্রাক চলাচলে সময় নির্ধারন করে দেওয়া জরুরী। বিশেষ করে অফিস টাইমে দশটা হতে পাঁচটা পর্যন্ত। এরপর বাকি পুরো সময় সেগুলোকে মালমাল পরিবহনের সময় বেঁধে দেওয়া উচিত।বা রাতে কন্সট্রাকশনের মাল ডেলিভারী দেওয়া যেতে পারে।

এ ব্যপারে উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিক সমিতিকে চিঠি দিয়ে নিশ্চিত করা যায় বলে পরামর্শ অনেকের। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সংস্কৃতি কর্মী সহ আরো কয়েকজনে জানান উপজেলা শহরে যদি ট্রাফিক পুলিশ দেওয়ার সিস্টেম থাকে তবে ট্রাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা যেতে পারে। নয়তো বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন স্পটে উপজেলা প্রশাসন বা ব্যবসায়ী কমিটির উদ্যোগে আনসার বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে যানজট নিরসন করা যায়। অনেকে বলছেন নিয়মনীতি লংঙ্ঘন করে অনিয়ন্ত্রিত দোকান পাট তৈরি করা হয়েছে সন্দ্বীপের বিভিন্ন রাস্তার পাশে।

জেলা পরিষদ ও রোডস এন্ড হাইওয়ের রাস্তা প্রসারের জন্য নিদ্দিষ্ট ফুটপাতের ব্যবস্থা না রেখে ভবন নির্মান করাতে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অদূর ভবিষৎ-এ এর প্রভাব ব্যপক ভাবে পড়ার আগে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সন্দ্বীপে বর্তমানে বিদ্যুৎ দুর্ঘটনায় বা বিদ্যুতের লাইন বিভ্রাট হলে পিডিবির গাড়ি চলাচল, নব নির্মিত ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপক গাড়ি দ্রুত আগুন নেভানোর কাজে সাড়া প্রদান ও এ্যাম্বুলেন্স সেবা দ্রুত প্রদান,বিভিন্ন অপরাধ বা নাশকতা রোধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে এখনি সন্দ্বীপের যানজট প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে অবৈধ মোটর সাইকেল বন্ধ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের গাড়ি চালানো, নিদ্দিষ্ট গতির বাইরে গাড়ি চালানোর কারনে যে সমস্ত দুর্ঘটনা ঘটে সেগুলোও বন্ধ হবে। এ জন্য উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন এলাকার সচেতন জনগন।

অন্যদিকে ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির লাইসেন্স প্রদানে BRTA সংস্থাকে সন্দ্বীপে এনে কয়েকদিনের জন্য কাজে না লাগালে সন্দ্বীপের নিরীহ, অসচেতন, অদক্ষ ড্রাইভার ও অবৈধ যানবাহনকে রাস্তা থেকে কয়েক বছরেও সড়ানো যাবেনা এবং অবৈধ যানবাহন মুক্ত সড়কের কোন সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য সাধারন যাত্রীদের। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ জরুরী।