আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
শনিবার, ০৯ জুন, ২০১৮   |   sonalisandwip.com
সন্দ্বীপে ভূট্টা চাষ প্রদর্শনীতে বাম্পার ফলন : আগ্রহী হচ্ছেন অন্য কৃষকরা

||.বাদল রায় স্বাধীন ||

সন্দ্বীপে দীর্ঘ দিন ধরে রি-কল প্রজেক্ট বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে নতুন টেকনোলজির প্রতিফলন ঘটানো। লবন সহিষ্ণু জাতের প্রচলন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো ফসলের চাষাবাদ ও জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং রাসায়নিক সার প্রয়োগে বিরত থাকা ইত্যাদি বিষয়ে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষন প্রদান করে আসছে।

তারই ধারাবাহিকতায় গত মার্চ মাসে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ১২ জন কৃষকদের দিয়ে ভূট্টা চাষ প্রদর্শনির আয়োজন করেন। প্রত্যেক কৃষককে নিবিড় খামার করন ও কৃষিকাজের আধুনিক ধারনা বিষয়ে প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়। তাতে সন্দ্বীপে ভূট্টা চাষের সম্ভাবনার উপরে একটি সেশন পরিচালনা করা হয়।

এরপর সবাইকে ১ কেজি করে উন্নত জাতের ভূট্টাবীজ, ৯৫০০ টাকার বিভিন্ন কৃষি উপকরন প্রদান করা হয়। তাদের একজন হল মোঃ সোহরাব। আজিমপুর ৬ নং ওয়ার্ডস্থ মনু হাজীর বাড়ীর সিদ্দিকের ছেলে, যার রি-কল আইডি নং ইপি-১১।

দরিদ্র এই কৃষক ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে ৩ কড়া জমিতে এই ভূট্টা বীজ বপন করে। সাথে টাঙানো হয় প্রদর্শনী প্লটের একটি সাইনবোর্ড। কয়েকদিন পর সুন্দর চারা গজানো দেখে সোহরাব ভূট্টা চাষের নিয়ম মেনে ফসলের যত্ন নিতে থাকে। প্রধান সড়কের পার্শ্ববর্তী ব্যতিক্রমি ফসলের চাষ দেখে পথিকরা ২ মিনিটের জন্য হলেও থমকে দাড়িয়ে পড়ে। সাইনবোর্ড দেখে বুঝতে পারে এটি নতুন ভ্যারাইটি ভূট্টা চাষের প্রদর্শনী।

কয়েক দিন পর লকলকে সবুজ ডগা যখন বাড়তে থাকে তখন পার্শ্ববর্তী কৃষকরা দেখতে আসে এই ভূট্টা ক্ষেত। কিছু দিন পর কলার মোচার মতই ভূট্টার মোচা বের হওয়া শুরু হয় তখন স্থানীয় যুবকরা এই ভূট্টা ক্ষেতের ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করতে থাকে তখন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই ভূট্টা প্রদর্শনী দেখতে আসে।

মাত্র ৬০ দিনে এই ভূট্টা পরিপক্ক হলেও সোহরাব মানুষের আগ্রহ দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে ভূট্টা ঘরে তুলতে দেরী করে।ভূট্টা উত্তোলনের পর মোচার বাকল ছড়ানোর পর সোনালী রংয়ের দৃষ্টিনন্দন ভূট্টা দেখে সবাই অবাক তাকিয়ে থাকে মাত্র ৩ করা জমি থেকে সোহরাব প্রায় ৬ মন ভূট্টা উৎপাদন করতে পেরে সে মহাখুশি।

গ্রামের অন্য কৃষকদের মাঝে সে একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আর আগামী সীজনে অন্য কৃষকরা ভূট্টা চাষের জন্য আগ্রহী হয়ে পরেছে। আর তার কাছ থেকে ভূট্টার খই, রুটি এবং খিচুড়ি খাওয়ার জন্য এবং হাঁস মুরগীর খাবার হিসেবে ৮০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে নিচ্ছে। তাছাড়া ভূট্টার গাছ সে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করছে।

এই বিষয়ে সোহরাব বলেন সন্দ্বীপের নিচু জমি গুলো ভূট্টা চাষের জন্য উর্বর ভূমি। রি-কল প্রজেক্ট আমাকে যেভাবে সহায়তা করেছে অনুরূপ  পৃষ্ঠপোষকতা অন্যান্য কৃষকরা পেলে এই ফসলটি অত্যন্ত   জনপ্রিয় ও লাভজনক হয়ে উঠবে।