আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
মঙ্গলবার, ০৩ জুলাই, ২০১৮   |   sonalisandwip.com
সন্দ্বীপে ভুয়া ডাক্তার দেলোয়ারের ৬ মাসের কারাদন্ড

 

তিনি ডাঃ দেলোয়ার হোসেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ সার্জন বলে পরিচয় দেন। আগাম মাইকে প্রচার করে গত ৫ বছর ধরে সন্দ্বীপের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাস অন্তর বিভিন্ন ফার্মেসীতে চেম্বার বসে রোগী দেখেন। অথচ এম.বি.বি.এস. বা এল.এম.এফ কিংবা মেডিসিনে তার কোন ডিগ্রী নাই। তবুও তিনি নিজকে অভিজ্ঞ বলে দাবী করে রোগী প্রতি ভিজিট নেন ২০০ টাকা।

বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রোডাক্ট আইটেম প্রেসক্রাইব করা থেকে বিনিময়ে মাসে মাসে তাদের কাছ থেকেনির্দিষ্ট অংকের চেক নেন। আবার কিছু কিছু অখ্যাত কোম্পানীর আইটেম প্রেসক্রাইবের বদলে ঐ ঔষধের বিক্রিত দামের অর্ধেক নিজের পকেটে নেয়ার সুযোগ নেন।

দীর্ঘদিন ধরে সচেতন মানুষের অভিযোগ তার চিকিৎসায় রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। চোখের সমস্যার যথাযথ চিকিৎসার অভাবে ভাল হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কেউ কেউ হারিয়েছে দৃষ্টিশক্তি।

কোন প্রকার শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা বৈধ সনদ ছাড়া মানবদেহের সবচাইতে স্পর্শকাতর সম্পদ চোখের চিকিৎসা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার এ ভুয়া চিকিৎসকের খবরটি যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: নুরুল হুদার কাছে।

মাইকের প্রচারিত সময় অনুযায়ী তিনি শুক্রবার বিকাল ৪ টায় পুলিশ সহ সন্দ্বীপের বাতেন মার্কেটে সাদিয়া ফার্মেসীতে গিয়ে হানা দেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইতেই মুখোশ উম্মোচিত হয়ে পড়ে এ ভুয়া ডাক্তারের। পরে মোবাইল কোর্টে ডা: দেলোয়ার! তার অযোগ্যতার কথা অকপটে স্বীকার করেন। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুল হুদার কোর্ট কোন প্রকার ডিগ্রী ছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে মূল্যবান চোখের চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগে ভুয়া ডাক্তার দেলোয়ার হোসেনকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। তাকে কারাদন্ড প্রদানের খবরে সারা সন্দ্বীপে সাধারণ রোগী ও সচেতন সমাজের মাঝে স্বস্থি নেমে আসে।

যেভাবে শুরু এ অভিযান: মাইকে প্রচার করে ২৭ জুন বুধবার চৌমুহনী বাজার রিয়াদ ফার্মেসীতে রোগী দেখার সময় বাজার কমিটির সভাপতি হিসেবে এ প্রতিবেদক ভুয়া চিকিৎসকের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি কোন সনদ প্রদর্শন করতে পারেননি। তবে চোখের চশমা টেষ্ট করার একটি প্রশিক্ষণ সনদের ফটোকপি প্রদর্শন করেন। তাও আসল ছিল কিনা সন্দেহ ছিল।

এ সনদ বলে তিনি মাইকে প্রচার করে চেম্বারে বসে চোখের রোগীর চিকিৎসা দিতে পারার বৈধতা আছে কিনা এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করলে ঐ ডাক্তার সন্দ্বীপের কোথাও আর চেম্বার না করার অঙ্গীকার করেন।

কিন্তু তার পরদিন সন্দ্বীপের হরিশপুর এলাকার বাতেন মার্কেটের সাদিয়া ফার্মেসীতে রোগী দেখার কথা ঐ এলাকায় মাইকে প্রচার করলে একটি সোর্স এ প্রতিবেদককে বিষয়টি জানান।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ নুরুল হুদা বিষয়টি অবহিত করলে তিনি যথাসময়ে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডাক্তারকে আটকের ব্যবস্থা করেন।