আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন
রবিবার, ০৬ জানুয়ারী, ২০১৯   |   sonalisandwip.com
ইউটিউব থেকে হাঁস পালনের আধুনিক কলা-কৌশল শিখে সফল সন্দ্বীপের তানিম

শামসুজ্জোহা তানিম। বয়স ৫৮ বছর। সন্দ্বীপের সন্তোষপুর ইউনিয়নের মিয়াবাড়ির বাসিন্দা মো. বিন কাসেমের ছেলে তিনি। দ্বীপের ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবল মাঠে ছিল তাঁর ব্যাপক খ্যাতি। জীবন-জীবিকার তাগিদে এক সময় চলে যান প্রবাসে। কিন্তু সাফল্য তাঁকে ধরা দেয়নি বিদেশের মাটিতে।

ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে এলেও দমে যাননি তানিম। শখের পাশাপাশি আর্থিক সফলতার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইউটিউব থেকে নানা কলা-কৌশল শিক্ষা নিয়ে শুরু করেন হাঁস পালন। অতি অল্প সময়ে বড় সফলতার হাতছানিতে তানিমের

হাঁস পালন প্রকল্প এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং অন্য উদ্যোক্তাদের মাঝে সৃষ্টি করেছে ব্যাপক অনুপ্রেরণা।

আগে থেকে পোল্ট্রি ফার্মে কিছু অভিজ্ঞতা থাকলেও সামাজিক মাধ্যম ইউটিউব থেকে আধুনিক কলা-কৌশল নিয়ে তানিম শুরু করেন হাঁস পালন। ৮ মাস আগে তিনি বাড়ির পাশে পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১২ একর জায়গায় সীমানা করে প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। পালিত হাঁসের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য তিনি কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্বল্প গভীরতার কয়েকটি জলাশয় তৈরির পাশাপাশি কিছু উঁচু মাটির টিলা সৃষ্টি করেন। এসব স্থানে কয়েকটি ছোট ছোট টিনের ঘরও নির্মাণ করেন তিনি। জলাশয়গুলোর পানিতে ছোট-বড় মাছের চাষ করলেও তা মূলত হাঁসের জলকেলি ও এগুলোর খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের

চিন্তা-ভাবনায় তৈরি করা হয়। ৮ মাস আগে তানিম ১২ একর জমির মধ্যে ১৬০০ হাঁসের বাচ্চা নিয়ে হাঁস পালন শুরু করেন। বর্তমানে ২০০০ হাঁস রয়েছে তাঁর খামারে।

জানা গেছে, আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করায়  ৪ মাস ১০ দিন পর থেকে হাঁসগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। এ খামার থেকে এখন প্রতিদিন গড়ে ৭০০ এরও বেশি ডিম পাওয়া যাচ্ছে। যা থেকে প্রতিদিন আয় হয় কমপক্ষে ৫০০০ টাকা।

সফল খামারি শামসুজ্জোহা তানিম বলেন, ‘দ্বীপে ডিমের চাহিদা অনেক বেশি। বিশেষ করে আমার খামারের ডিমগুলো এলাকায় পছন্দের হওয়ায় এখানকার আকবরহাট, মুন্সিরহাট, হক সাহেবের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ ডিম বিক্রির জন্য সরবরাহ করি।’

হাঁস পালনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এ খামার থেকে ভবিষ্যতে প্রচুর  মুনাফা অর্জনের আশাবাদী তিনি।

মো. হাশেম নামে একজন নতুন উদ্যোক্তা বলেন, ‘তানিমের হাঁস পালনে দ্রুত উন্নতি ও সফলতা দেখে আমিও  আর্থিক সফলতার আশায় হাঁস পালন শুরু করেছি।’

সন্তোষপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. মাকছুদুর রহমান ফুল মিয়া বলেন, ‘তানিমের এমন উদ্যোগ এখানকার বেকার যুবকদের মাঝে আশার আলো সৃষ্টি করেছে। তাঁকে অনুকরণ করে হাঁস পালন করলে আর্থিক সফলতা অর্জন করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি।’

# রহিম মোহাম্মদ, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম)  

প্রতিবেদনটি আজ জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠে প্রকাশিত হয়েছে