আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার, ০৮:২২ অপরাহ্ন
রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪   |   sonalisandwip.com
হাটহাজারীতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব মাটি খেকো আর প্রশাসনের লুকোচুরি খেলা প্রতিবেদনে ক্ষতি হলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি

হাটহাজারীতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব মাটি খেকো আর প্রশাসনের লুকোচুরি খেলা প্রতিবেদনে ক্ষতি হলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি

মোঃ এরশাদ আলী:

হাটহাজারীতে প্রায় প্রতিদিনই চলছে মাটি কাটা। কখনও পাহাড় কখনও কৃষি জমির টপসয়েল। আর এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেইসবুকে ক্ষোভের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

পোস্টে মাটি কাটার সঠিক ব্যক্তিবর্গের নাম প্রকাশ না হলেও মাটি কেটে ব্যবসার উদ্দেশ্য ট্রাকের মাধ্যমে বহনের সময় সড়কের মাটি পড়ে ঝু্ঁকিপূর্ণ হওয়া, টপসয়েল কাটায় জমির ক্ষতির বিষয় উল্লেখ করে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এমনকি মিডিয়াকে দোষারোপ করতে ভুল করছেন না তারা।

অথচ মাটি কাটার সংবাদ পেলেই উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থল গিয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন তবে প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মাটি খেকোরা অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় বিড়ম্বনায় পড়ছেন উপজেলা প্রশাসন। এ যেন মাটি খেকো ও প্রশাসনের লুকোচুরি খেলা চলছে।

অপরদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনেক স্থানে বাধা দিয়েও প্রভাবশালী হওয়ায় তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে সাধ্যমত উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করে রোধ করার চেস্টা করছেন।

অপরদিকে মিডিয়ার প্রতিবেদন কিংবা অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাইলেও অনেকেই মিডিয়াকে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন।

কখনও স্থানীয় এমপি কখনও বা উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নেয়ার কথা বললেও খোঁজ নিলে দেখা যায় সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত তাদের নাম ভাঁঙ্গিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেস্টায় রত তারা।

সম্প্রতি উপজেলার গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নে এম এস এগ্রো ফার্মের সাইনবোর্ড লাগিয়ে মাছের প্রজেক্ট ও বাগানের নামে কৃষি জমির টপসয়েল কেটে বিশাল পুকুর খনন করছেন। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে ছোট বড় দু দুটি এস্কেভেটর।

ঘটনাস্থলে নুরুল আবছার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রতিবেদককে প্রজেক্টের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

জমির মালিক কে জানতে চাইলে আলমগীর নামে এক ব্যক্তি বলে প্রতিবেদককে তার মোবাইল নাম্বার প্রদান করেন।

পরে জানতে চাইলে তিনিও একই সুরে কথা বলেন। তবে অনুমতির কাগজপত্র চাইলে দিবেন বললেও পরে দিতে পারেন নি।

বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম মশিউজ্জামান কোন অনুমতি দেয়া হয়নি জানিয়ে বলেন, ওসিসহ ঘটনাস্থলে দুইবার অভিযান চালালেও কাউকে পাওয়া যায়নি। সংসদ সদস্য কিংবা উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঁঙ্গিয়ে তারা আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন।

কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কৃষিজমির টপসয়েল কাটায় নিয়মিত মামলা দায়ের হবে।

এদিকে প্রশাসনের কাছে জানতে চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন নুরুল আবছার। কয়েকজন সাংবাদিকের মুঠোফোনে প্রতিবেদনের কারণে তাদের কোন ক্ষতি হলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন।

হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে একসময়ের সাংবাদিক দাবি করে বলেন কেন বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন। আমরা তো একই পেশার লোক। প্রতিবেদনের কারণে কোন ক্ষতি হলে প্রতিবেদককে ছাড় দেবেন না বলে জানান। এসময় তিনি কিছু সাংবাদিককে টাকা দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। এদিকে সাংবাদিককে হুমকির বিষয়টি অন্যান্য সাংবাদিকরা শুনে বিস্মিত হন। তারা প্রতিবাদ করে বলেন চোরের মার বড় গলা।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে কৃষি জমির টপসয়েল কাটায় মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া এলাকায় কামাল মিয়া, ও আলম নামে দুইজনকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর আওতায় পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম মশিউজ্জামান। এসময় পিআইও নিয়াজ মোর্শেদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।