আজ সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ || ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩   |   sonalisandwip.com
প্রকৃতি ছাড় দেয়...কিন্তু ছেড়ে দেয় না : ইসমাঈল হোসাইন ফয়সাল

প্রকৃতি কখনো প্রতিহিংসাপরায়ণ হয় না, মানুষ যেমন হয়। প্রকৃতি কখনো অভিসম্পাত করে না, মানুষ যেমন করে। প্রকৃতি কখনো লোভী হয় না, মানুষ যেমন হয়। প্রকৃতি হয়, শান্ত-স্নিগ্ধ অপ্রতীম।

William Wordsworth-বলেছেন, “প্রকৃতি কখনো হৃদয় ও ভালোবাসার সঙ্গে, ধোঁকা দিতে পারে না। কিন্তু আমরা যারা নিজেদেরকে মানুষ বলে দাবি করি, সেই আমরা ভালোবাসার হৃদয়ের মন ভাঙ্গি এবং ভালোবাসার সঙ্গে করি মিথ্যাচার, ভাঙ্গা-গড়ার খেলায়, জলকাদা মিশিয়ে একাকার করে দিই” প্রকৃতিও তখন বিস্মিত হয়, ইংরেজিতে একটা কথা আছে-“Revenge of the nature”। কিন্তু, শুরুতেই বলেছি প্রকৃতি কখনো “প্রতিহিংসাপরায়ণ/নেতিবাচক” হয় না। তাহলে, “Revenge of the nature”-কথাটা কেন বলি...??

নিশ্চয় তারই একটা কারণ আছে। প্রকৃতিও মানুষের মতো, প্রাণের দাবি রাখে। প্রকৃতির বিচার বলে, একটা কথা আছে। প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেয় না। আজকাল মানুষের মন থেকে-“দয়া, মায়া, মমতা, সহমর্মিতা, সততা, ভালোবাসা”-এই সব মানবিক গুণাবলী উঠে যাচ্ছে।

দেখা যাচ্ছে বিনা কারণে, মানুষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠছে। হিংসার দাবানলে এরা জ¦লছে ভিতরে-ভিতরে। আর তাই অন্যের ক্ষতি করতে, এদের প্রাণও কাঁদে না। এই ধরনের মানুষ, বড়-লোভী ও স্বার্থপরও হয়ে থাকে।
প্রকৃতিকে ভালোবাসে না এমন কোন মানুষ, এই পৃথিবীতে নেই। প্রকৃতি নিয়ে আমাদের জানার কোন শেষ নেই। এই পৃথিবীতে সকল মানুষ প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে ভালোবাসে। মানুষ যখন প্রকৃতির মাঝে বা, প্রকৃতির কাছে চলে যাই। তখন মানুষ মনের-ভিতরে এক পরম শান্তি অনুভব করে থাকে। এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, প্রকৃতিও ঠিক ততদিনই থাকবে। প্রকৃতি আমাদের মানুষদেরকে যেভাবে সাহায্য করে, তেমনি আমাদেরও উচিত প্রকৃতিকে সাহায্য করা। জীবনে প্রকৃতির-প্রেমিকরাই সব থেকে বেশি সুখী হয়ে থাকে। কারণ, তাড়া প্রকৃতিকে ভালোবেসে কখনোই আঘাত পাই না। “প্রকৃতি আমাদেরকে শুধু দিতেই পারে, আমরা প্রকৃতিকে কিছুই দিতে পারি না। আমরা শুধু প্রকৃতি থেকে নিতেই পারি”।
আমি দেখেছি মানুষ আজকাল, “বড়ই অকৃতজ্ঞ, স্বার্থপর, অবিবেচক, বিবেকহীন, হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর ও মিথ্যাবাদী”-ও বটে। ইসলামের আদর্শ থেকে এরা সরে গেছে। তাই নির্লিপ্তভাবে অন্যের ক্ষতি করার, প্রয়াস পাচ্ছে। গত কয়েক দশকে, পৃথিবী খুব দ্রæত বদলে গেছে। এর চেয়েও দ্রæত বদলেছে, “মানুষের মন ও মানসিকতা”।

চরিত্রের সুকুমার বৃত্তি গুলো-“দয়া, মায়া, মমতা, মানবিকতা”-বদলে রূপ নিয়েছে, নিষ্ঠুরতায়। এমন হেন কাজ নেই যা কিনা আজকাল মানুষ পারে না। এরা সবই করতে পারে, নিষ্ঠুরতার চরমেও পেীছাঁতে পারে এবং চরম অন্যায়ও করতে পারে। মানুষের সামনে, আজ সব-দুয়ার বন্ধ। মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষকে কঠিন এক পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। বুঝাইতে চেয়েছেন যে, কোনো ক্ষমতাই তোমাদের নেই। এমনকি প্রকৃতিও মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে মাত্র। বেঁচে থাকাটাই মানুষের জন্য আসলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

“অহংকার, লোভ, লালসা, হিংসা, বিদ্বেষ, এই-সব তোমাদের মানায় না। তোমাদের সামর্থ্য খুবই সীমিত” এবং “William Wordsworth-বলেছেন, প্রকৃতির কাছে গেলে মন ভালো হয়ে যায়। প্রকৃতি সুন্দর হলে, মনও সুন্দর হয়ে যায়”। কিন্তু, কোথায় গেলে...আর কত’টা বুঝাইলে...মানুষ কী বুঝবে...??

বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু লাগে কী...??

এমন বিপর্যের মুখোমুখি হয়েও যদি আমরা সেটা বুঝতে না পারি। তবে মানুষ হিসেবে, আমরা সত্যি অযোগ্য।
মানুষের মনে কষ্ট দেওয়ার প্রতিযোগিতা যেনো, পাল্লা দিয়ে বেড়ে গেছে। অবলীলায় মানুষ-মানুষের মনে, কষ্ট দেয়। এরা একবারও ভাবে না, “মনের মালিক, একমাত্র আল্লাহ” মানুষের মনে কষ্ট দিলে, সেই কষ্ট অভিশাপ হয়ে ঝরে পড়ে।

“ইসলাম হলো, সাম্য ও মৈত্রীর ধর্ম”। এই কথা আজও মানুষ নামের কিছু, অমানবিক-মানুষ ভুলিতে বসেছে। যারা অন্যের ভালোটা দেখে, হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে, তার পিছনে পড়ে থাকে। এদের কখনো কল্যাণ হয় না। আজ না হোক কাল...একদিন না একদিন...খারাপ কাজের প্রতিফল, সেই এই-দুনিয়াতেই পেয়ে যাবে।

“প্রকৃতির হিসাব, ১০০% নির্ভুল” কেউ এর থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে না। “প্রকৃতি ছাড় দেয়...কিন্তু ছেড়ে দেয় না”। অন্যায়-অবিচারের ফল, সেই এই দুনিয়াতেই পেয়ে থাকে। মানুষ লোভের-আঁধারে অন্ধ হয়ে থাকে, এই কথা ভাবে না- “লোভ আর হিংসা”-মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

“একজন ভালো মানুষ কখনোই অন্যের চলার পথে, কাঁটা হতে পারে না। অন্যের কষ্টে, তাদের মন ব্যথিত হয়” কিন্তু, মন্দ-লোকেরা তা অনুধাবন করতে পারে না। “এদের, হৃদয়-মন খুবই নিষ্ঠুর”।
আপনি যদি জীবনে ব্যর্থ হতে না চান, তাহলে আপনি প্রকৃতিকে নিয়ে ভাবুন-জানুন। প্রকৃতিকে ভালোবাসুন সব-সময় এবং প্রকৃতির কাছাকাছি থাকুন। তাহলে আপনি কোনদিনও ব্যর্থ হবেন না। আমি মনে করি, মানুষের চেয়ে “প্রকৃতির-কল্পনা” অনেক অনেক বেশি। কারণ, প্রকৃতি কখনোই আমাদের শিথিল হতে দেয় না। মানুষকে বুদ্ধিমত্তা তখনই বলে, যখন যে ব্যক্তি প্রকৃতির সাথে নিজেকে খাপ-খাইয়ে নিতে পারে। “প্রকৃতি হলো আমাদের ঠিক, পিতা-মাতার মতো। যা আমাদের কখনোই  ক্ষতি বা, ধ্বংস করে না”। বরং, প্রকৃতি আমাদেরকে আরো উল্টো-যতœ করে থাকে। আর যাই করেন না কেনো...?? কখনো প্রকৃতিকে নিয়ে, খেলবেন না। কারণ, প্রকৃতি যখন আপনার প্রতিশোধ নিবে, তখন আপনি তার আঘাত কখনো সইতে পারবেন না। কারণ, একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন, “প্রকৃতি আমাদের ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না”। আমরা যদি আজ প্রকৃতির যতœ নেই। তাহলে প্রকৃতি আমাদের আগামী দিনের, “একটি সুন্দর ও সুস্থ জীবন” উপহার দিবে।
যাদের মনে অনেক দুঃখ-কষ্ট, এবং যারা একাকী হয়ে আছেন তাদের জন্য সমাধানও রয়েছে। আপনারা বাহিরে গিয়ে প্রকৃতিকে দেখুন, প্রকৃতিকে নিয়ে ভাবুন ও প্রকৃতিকে নিয়ে কিছু করুন। তাহলে দেখবেন আপনার মনে, কোন দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। আমরা সকলেই প্রকৃতিকে তার পথে চলার, সুযোগ-সুবিধা করে দেই। কারণ, প্রকৃতির কাজ আমাদের চেয়েও অনেক ভালো বুঝে।

“শুধু বেঁচে থাকায় যথেষ্ট নয়...??

এমনকি জীবনে স্বাধীনতা, সুখ/শান্তিও নয়। এর পাশাপাশি প্রকৃতিকেও উপভোগ করার প্রয়োজন রয়েছে”। আমরা প্রকৃতি থেকে বাতাস পাই ও প্রকৃতি থেকে আশীর্বাদ পাই। সব-কিছু প্রকৃতি থেকেই আসে। তবুও আমাদের প্রকৃতির প্রতি, কোন রকমের আনুগত্য নেই।
সহনশীলতা সম্প্রীতি-বোধের মাত্রা, তারও তো আছে।

তাই নয় কী...??

তাই সময়ের তাগিদে, কখনো কখনো প্রতিশোধপরায়ণ তাকেও হইতে হয়। কী দেয়নি এই প্রকৃতি আমাদের...??

“আলো, বাতাস, নদী, পাহাড়, ঝরনা, ফুল, প্রজাপতি-মেঘ, এমনকি গহিন অরণ্য”-তাই জন মুরের ভাষায় বলি যখন আমি প্রকৃতির কাছে যাই, মনটাকে হারিয়ে ফেলি। খুঁজে পাই আমার আতœাকে। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, এইভাবেই প্রকৃতি হচ্ছে ক্ষত-বিক্ষত। “অশ্রæসিক্ত প্রকৃতি নিজেও আজ মানুষের এমন অসহায়ত্বে, স্তব্ধ-নির্বাক” তাহলে কোথায় মানুষের ক্ষমতা...?? মানুষ প্রকৃতির কাছে, সত্যিই অতিক্ষুদ্র।
অভিশাপের শব্দ হিসেবে, “লানত/গজব” বেশি ব্যবহৃত হয়। প্রিয় নবী-(সা.)-বলেছেন, তোমরা পাস্পর-পরস্পরকে আল্লাহ তা’আলার-“লানত/অভিসম্পাত/গজব ও জাহান্নামের বদ-দোয়া” দিও না। তাই কারোর উপর রাগ হলে, তাকে অভিশাপ দিতে নেই। বরং, তার জন্য “হিদায়াতের দোয়া” করা, বেশি কল্যাণকর।

প্রত্যেক মানুষই আল্লাহর মাখলুক, “তাই অহেতুক দয়াময় আল্লাহর কাছে, তাঁর অন্য মাখলুকের ধ্বংস-কামনা করা, মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না”। এবং ইসলামের দৃষ্টিতে কাউকে অভিশাপ দেওয়া বা, কারও অকল্যাণ কামনা করা সম্পূর্ণ হারাম ও অনুচিত। “অনেক সময় অভিশাপ, হিতে-বিপরীত হয়। এবং যে অভিশাপ দেয়, সে নিজে স্বয়ং অভিশাপের অনলে পুড়ে” তেমনিভাবে কাউকে অভিশাপ দেওয়াও, কোনো মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়।

প্রিয় নবী-(সা.)- বলেছেন, মুমিন কখনো অভিসম্পাতকারী হয় না এবং আরো বলেছেন, তোমরা পরস্পর-“আল্লাহর-লানত/গজব/জাহান্নামের-অভিশাপ” দিবে না। অভিসম্পাতকারী আখেরাতেও মান-মর্যাদা পাবে না এবং কিয়ামতের দিন অভিশাপকারীরা সুপারিশ করতে পারবে না।

“হাদিসে বুঝা যায়, যে লানত/অভিশাপ দিবে, সে যদি অভিশাপের উপযুক্ত না হয়। তাহলে এই অভিশাপ তার দিকে যায় না” মহান-আল্লাহ, আমাদের সবাইকে এই-ধরনের কাজ থেকে হেফাজত দান করুন-(আমিন....আমিন....আমিন)


পরিশেষে, আমি বলবো-“আমি আমার, সৃষ্টিকর্তাকে অনেক অনেক বিশ্বাস করি। তাই আমি আমার, সৃষ্টিকর্তার-সৃষ্টিকে প্রকৃতি বলে অভিহিত করি এবং প্রকৃতিকে আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। প্রকৃতির উপর, আমার গভীর আস্তা-বিশ্বাস ও ভালোবাসা রয়েছে। এবং প্রকৃতি যাই বিচার করবে, তা আমি মেনে নিতে প্রস্তুত”।

“আপনি, কখনো কারো দীর্ঘশ্বাসের কারণ হবেন না। দীর্ঘশ্বাস খুবই ভয়ঙ্কর এবং মানুষ-মানুষকে ছেড়ে দিলেও, দীর্ঘশ্বাস কখনো কাউকে ছাড়ে না” এবং “সব-প্রতিশোধ নিজে নিতে যেও না, তাতে তোমার আর প্রতারকের মধ্যে কোনো পার্থক্যই থাকবে না” বরং, কিছু প্রতিশোধ সময়ের উপর ছেড়ে দাও। সময় তোমার হয়ে, বড় প্রতিশোধটা নিবে এবং “যে কাঁদায় সেইও একদিন কাঁদে...এটা কোনো অভিশাপ নয়, এটা নিয়তির বিচার” মানুষকে অভিশাপ না দিলেও “রুহের-হায়” বলে একটা কথা আছে। যাকে “Revenge of the nature” বলে। কুরআনের ভাষায় বলে-“ফিকারাহ”।

“আপনি, কারো ক্ষতি করে ভুলে গেলেও, প্রকৃতি কিন্তু ভুলবে না এবং প্রকৃতি ক্ষমাও করবে না”।

মানুষের কষ্ট থেকে আসা, এক-একটা দীর্ঘশ্বাস এর- “রুহের-হায়” আপনাকে কখনোই ছাড়ঁবে না এবং “এটাই চিরন্তন সত্য যে, আল্লাহ কখনো কাউকে ঠকায় না”।
((IH.Foisal মতে, “আমাদের মন-মানসিকতা/আচার-আচরণ/অভ্যাস/রুচি এবং নৈতিক মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিক শিক্ষা ও গুনাবলি”....সুন্দর হোক)