আজ বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪ || ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩   |   sonalisandwip.com
আমরা যারা পুলিশ : কাজী জিয়া উদ্দিন, ডিআইজি

যে যাই বলুক, আমরা পুলিশের সদস্যরা দোষে গুণে মানুষ। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়- তুফান-বন্যা যে কোন দুর্যোগে দুর্দিনে জনগণের পাশে থেকে জনগণকে সেবা দেয়াই আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমাদের ভুলভ্রান্তি আছে, তবে দিনের শেষে রাম-রহিমের মুখে হাসি ফুটাতে গভীর মমত্ববোধ ও নিবিড় দায়িত্ব বোধে আমরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাব। আমাদের ভুল ভ্রান্তি আছে, আমি অকপটে স্বীকার করছি। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে,"All error gracefully acknowledged is a victory own".ভুল স্বীকার করে তা শুধরে নিতে পারাও অনেক বড় সাফল্য।

আমাদের সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মধ্যকার ঐকতান এবং একাত্তরের চেতনা উৎসারিত শক্তি আমাদেরকে নতুনভাবে জাগিয়ে তোলে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য। আমরা জনগণের কাছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ঔপনেবেশিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে আমরা জনগণের সেবক হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জনে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।

‘“আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। আপনারা বিদেশী শোষকদের পুলিশ নন- জনগণের পুলিশ। আপনাদের কর্তব্য জনগণের সেবা করা, জনগণকে ভালবাসা, দুর্দিনে জনগণকে সাহায্য করা।” সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বান বাংলাদেশ পুলিশের কর্মপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে চলছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়ে ওঠা স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণা করে জনবান্ধব পুলিশ এ পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নিজেদের কর্মের সাফল্য ও উজ্জ্বলতায় জনজীবনের শেকড়ে আজ আমরা নিজেদের অবস্থানকে মর্যাদাপূর্ণ ও সুসংহত করতে বদ্ধপরিকর।

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ আমাদের মনে করিয়ে দেয় সম্প্রীতিময়, শোষণমুক্ত, জঙ্গিবাদ ও সম্প্রদায়িকতামুক্ত মানবিক সুন্দর একটি দেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমরা বিশ্বাস করি, একাত্তর এর অর্জন আমাদের পরবর্তী অগ্রযাত্রার অপরিহার্য পাথেয়। তাই মুক্তির স্পপ্নকে আমরা আজ দেশ গড়ার স্বপ্নে রূপান্তর করতে চাই। মানুষের সাথে কথা বলার জায়গা, ভাব বিনিময়, অংশীদারিত্বের সুযোগ সৃষ্টিকরে পারস্পরিক ভালবাসা ও সম্প্রীতির আবহে কাজ করার নির্মল পরিবেশ আমাদেরকেই রচনা করতে। একজন বিপদাপন্ন অসহায় মানুষের পাশে কেবলমাত্র পেশাদারিত্বের খাতিরে নয়; মানবিকতা, মায়া,মমতা,ভালেবাসা ও সেবার ব্রত নিয়ে দাঁড়ানোর মধ্যে যে নির্মল আনন্দ ও তৃপ্তি রয়েছে, তা আমাদেরকে নিবিড়ভাবে অনুধাবন করতে হবে।

ঔপনিবেশিক বৃত্তাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে এসে সমাজ ও জনহিতৈষী বিকাশ ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি ইতিবাচকতার সূচীমুখ খুলে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের। বিভাজন নয়, মেলবন্ধন, এই বিশ্বাসে উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের আর্থ-সামাজিক জীবনের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি ঐক্য ও নির্ভরতার ভিত প্রসারিত করতে চাই আমরা বর্তমান প্রজন্মের পুলিশ সদস্যবৃন্দ।

জনগণের শুভকামনা ও ভালোবাসা অতীতে যেমন সর্বদাই আমাদেরকে ঋদ্ধ করেছে, আগামীতেও তা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, পুলিশে সৃজনশীল মেধা ও শ্রম প্রযুক্ত হবে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায়। আমাদের ভেতরকার অতুল বৈভব ও অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, সাধারণ মানুষের অভয়ারন্য নির্মাণ করতে চাই। আমরা ঐকান্তিকভাবে বলতে চাই, পুলিশই হবে আমজনতার বরাভয়। আমার লিখা পড়ে যাদের ভ্রুকুঞ্চিত হবে, তাদের জন্য একটি সবক, " নির্জনে নিমগ্ন চিত্তে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন,মানুষ হিসেবে আপনি আপনার কর্মস্থলে কতটুকু স্বচ্ছ্ব ও সৎভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন?" এ সমতটে নির্লোভ, নির্ভীক সাধু বা দরবেশ খুব একটা পরিলক্ষিত হয়না। উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো, আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রানান্তকর প্রচেষ্টা আখেরে সফল হয়না। Mind it,"All that go to the church are not saints".পৈতা লাগালেই বৈষ্ণব হয়না।