আজ রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ || ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার, ০২:৫১ অপরাহ্ন
শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩   |   sonalisandwip.com
৯ উইকেটের ব্যবধানে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের : ৯৮ রানে অলআউট নিউজিল্যান্ড

নতুন বলে শরিফুল ইসলাম-তানজিম সাকিবরা রীতিমতো আগুন ঝরালেন! তাদের পেসে পুড়ে ছাই হয়েছে কিউই ব্যাটাররা! পুরো দল মিলে স্কোরবোর্ডে ১০০ রানও তুলতে পারেনি- অলআউট হয়েছে ৯৮ রানে।

যা বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ, ঘরের মাঠে কিউইদের ওয়ানডে ইতিহাসেরই চতুর্থ সর্বনিম্ন এবং ২০০৭ সালের পর সর্বনিম্ন সংগ্রহ। বোলারদের এমন বীরত্বের পর নেপিয়ারে বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন ব্যাটাররা।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। সেটাও ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। শনিবারের এই সকালটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য নিশ্চয়ই রূপকথার!

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩১ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৯৮ রানে থামে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান এসেছে উইল ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার।

জবাবে খেলতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভার ১ বলে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৫১ রান করে অপরাজিত থেকেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দেখে-শুনে শুরু করেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সৌম্য সরকার।

কিউই পেসারদের গতি আর বাউন্স সামলে ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন তারা। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চোখের সমস্যায় মাঠ ছাড়তে হয় সৌম্যকে। তবে তা গুরুতর কিছু নয়। লক্ষ্য ছোট বলেই তাকে নিয়ে ঝুঁকি নেয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন বিজয়ও। ৩৭ রান করে বিজয় সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৬৯ রানের জুটি। বিজয় যখন ফেরেন, তখন জয় থেকে কেবল ১৫ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। বাকি কাজটা লিটনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুতই শেষ করেছেন শান্ত। এরই মধ্যে নিজের হাফ সেঞ্চুরিটাও তোলে নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড।

টাইগার পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি কিউইরা।

শুরুর দুই উইকেটই নিয়েছেন তানজিম সাকিব। 5 তানজিম হাসানও দারুণ বল করে ৩ উইকেট নেন। ছবি: সংগৃহীত ১৭তম ওভারে সাকিবের সঙ্গে উইকেট পার্টিতে যোগ দেন শরিফুল ইসলাম। টম লাথামকে ২১ রানে ফিরিয়ে দিনের প্রথম শিকার ধরেন এই বামহাতি পেসার।

নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে ফিরে আবারও উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি। ১৯ তম ওভারে ২৫ রান করা উইল ইয়ংকে সাজঘরে ফেরান। এর এক ওভার পর ফিরে নিজের টানা তিন ওভারেই উইকেট তুলে নেন শরিফুল।

এবার ২ রান করা মার্ক চ্যাপম্যানকে ফিরিয়ে কিউই টপ অর্ডার ভেঙে দেন শরিফুল। অন্য প্রান্তে সাকিবও আগ্রাসী ছিলেন। ২৩তম ওভারে টম ব্লান্ডেলকে ফিরিয়েছেন তিনি।

৪ রানে ব্লাডেন ফিরলে ২৩ ওভার শেষে মাত্র ৭০ রান তুলতেই ছয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। 6 দুর্দান্ত বোলিংয়ে টানা তিন ওভারে তিন উইকেট নেন শরিফুল। ছবি: সংগৃহীত শরিফুল-সাকিবের মতোই এদিন কার্যকরী ছিলেন সৌম্য সরকার।

নিউজিল্যান্ডের ৬ উইকেট পরার পর বোলিংয়ে এসে ৩ উইকেট তুলে নেন সৌম্য। আর কিউইদের কফিনে শেষ পেরেকটা মারেন মুস্তাফিজুর রহমান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল‍্যান্ড: ৩১.৪ ওভারে ৯৮ (ইয়াং ২৬, রবীন্দ্র ৮, নিকোলস ১, ল‍্যাথাম ২১, ব্লান্ডেল ৪, চ‍্যাপম‍্যান ২, ক্লার্কসন ১৬ , মিল্ন ৪, আশোক ১০, ডাফি ১*, ও’রোক ১; শরিফুল ৭-০-২২-৩, তানজিম ৭-২-১৪-৩, মুস্তাফিজ ৭.৪-০-৩৬-১, সৌম‍্য ৬-১-১৮-৩, মিরাজ ১-০-৩-০, রিশাদ ৩-০-৪-০)।

বাংলাদেশ: ১৫.১ ওভারে ৯৯/১ (সৌম‍্য আহত অবসর ৪, এনামুল ৩৭, শান্ত ৫১*, লিটন ১*; মিল্ন ৪-০-১৮-০, ডাফি ৫-০-২৭-০, ক্লার্কসন ২-০-১৯-০, ও’রোক ৪-০-৩৩-১, আশোক ০.১-০-২-০)। ফল: বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তানজিম হাসান।

ম্যান অব দ্য সিরিজ: উইল ইয়াং।